মঙ্গলবার দুপুরে মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাওয়াল সরকারি বিশ^বিদ্যালয় কলেজের ছাত্র ও চান্দনা উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ শাখার ছাত্রদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরো আহত হয়েছেন চান্দনা কলেজের প্রভাষক নজরুল ইসলাম।
চান্দনা হাই স্কুল ও কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে স্কুলের প্রভাতি শাখার ক্লাস শেষ হয়। পরে দিবা শাখার ক্লাস শুরু হয়। এ সময় কলেজের মাঠে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছিল। একপর্যায়ে কলেজ ভবনের পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্তে হঠাৎ হই-হুল্লোড় শুরু হয়। কলেজের ছাত্র-শিক্ষক এগিয়ে গিয়ে দেখতে পায় কিছুসংখ্যক বহিরাগত ছাত্রের সাথে চান্দনা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রদের হাতাহাতির ঘটনা চলছিল। কলেজের শিক্ষক ও ছাত্ররা এগিয়ে গেলে বাহিরাগত ছাত্ররা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় বহিরাগত এক ছাত্রকে শিক্ষকরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শতাধিক ছাত্র লোহার রড ও লাঠি-সোটা নিয়ে চান্দনা কলেজে হামলা চালায়। এ সময় ভাওয়াল সরকারি কলেজের ছাত্ররা চান্দনা স্কুল অ্যান্ড কলেজের আসবাবপত্র, মাইক, ছাত্রদের বাইসাইকেল ভাঙচুর করে। ওই সময় পাশর্বর্তী ভবনে স্কুলের প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় শাখায় ক্লাস চলছিল। বহিরাগত ছাত্রদের তাণ্ডবে প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় শাখার শিশু-কিশোর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্কুলের শিক্ষক ও নিরাপত্তাকর্মীরা কলাপসিবল গেট ও গ্রিল ভেতর থেকে আটকে দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের রক্ষা করে। সংবাদ পেয়ে বাসন থানা পুলিশ ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে স্কুল ছুটি হলে গেটের বাইরে পুলিশ প্রহরায় অভিভাবকদের ডেকে শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হয়।আহত তানভীর, শরিফুল, আকন্দ, ফয়সাল ও রুবায়েত পাশর্^বর্তী সিটি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নেয় বলে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।বাসন থানার ওসি জানান, চান্দনা স্কুল অ্যান্ড কলেজ শাখার এক ছাত্রের সাথে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা চলছে।
চান্দনা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল জাকী বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। আমারা আহত ছাত্রদের চিকিৎসার সব দায়ভার নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি বিশ^বিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদা সিকদার, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি জিকো, বাসন থানার ওসি এ কে এম কাওছার চৌধুরীসহ স্থানীয় মুরুব্বিদের নিয়ে বসেছি। বিষয়টি তদন্ত করে বের করার চেষ্টা করছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনা আর না ঘটে। ভাওয়াল বিশ^বিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে এ ঘটনা নিয়ে ভবিষ্যতে তারা কোনো প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হবে না। আমরা স্থানীয় অভিভাবকদের নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী ১ ফেব্রয়ারি আবার বসব।